অলংকরণ: সৌম্য শুভ্র দাস
নির্লিপ্তা মজুমদার শ্রেয়া
বাংলা সাহিত্যের একজন শ্রেষ্ঠ বাঙালি কথাসাহিত্যিক, ঔপন্যাসিক তথা জনপ্রিয় গল্পকার হিসাবে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের নাম সোনার অক্ষরে লিখিত। আধুনিককালের সাহিত্য বিশারদদের মতে তিনি বাংলা ভাষার সর্বোত্তম লেখক।
ছায়া পত্রিকায় শরৎচন্দ্রের প্রথম লেখা গল্পগুলো ঠাঁই পাওয়ার পর তিনি লেখালেখি আরম্ভ করেন৷ তবে ১৯১৬ সালে চাকরি ছেড়ে তিনি বাংলা-সাহিত্যিকদের রঙ্গসভা বেছে নেন। তাঁর রচিত গল্পকাহিনী বাঙালি পাঠকদের বড় এক অংশের চিত্ত জয়ের দ্বারা তাঁর আগমনের বোধন সূচনা করেছিলেন। ১৯১৪-১৯১৯ এর মাঝে তিনি রচনা করেছিলেন তাঁর শ্রেষ্ঠ উপন্যাসগুলো। আজ শরতের এক শুভ্র দিনে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ১৪৪তম জন্মবার্ষিকী। সেই উপলক্ষে তাঁর রচিত কিছু উপন্যাস সংক্ষিপ্ত আকারে আলোচনা করছি।
শ্রীকান্ত
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের চার খন্ডে সমাপ্ত আত্মজীবনীমূলক উপন্যাসে প্রধান চরিত্র শ্রীকান্তের অভিজ্ঞতা বর্ণনাচ্ছলে এতে নানান বিচিত্র ঘটনা সমাবেশ করা হয়েছে এবং শ্রীকান্ত-রাজলক্ষ্মীর প্রণয়-কাহিনী শেষ পর্যন্ত প্রবাহিত হয়েছে। পাশাপাশি তৎকালীন বাংলার সমাজের চিত্রও ফুটে উঠেছে। গবেষকদের ধারণা শ্রীকান্ত-এর মধ্যে লেখকের ব্যক্তিগত জীবনের কিছু অংশ প্রতিফলিত হয়েছে।
দত্তা
গ্রামীণ পরিবেশের আলোকে রচিত এ উপন্যাসে প্রেম, ভালোবাসা, রাগ, অভিমান ও অত্যাচারের কূটকৌশল সব-ই সুনিপুণভাবে তুলে ধরেছেন লেখক। নবজাগরণের রশ্মি সমগ্রভাবে এ উপন্যাসে বিচ্ছুরিত হয়েছে।
দেনা-পাওনা
এই উপন্যাসে চিত্রিত সমাজব্যবস্থার মাধ্যমে শরৎ যেমন স্বৈরতন্ত্র কীভাবে তৎকালীন জমিদারি শাসনব্যবস্থা দমন করে রেখেছিল, তা ফুটিয়ে তুলেছেন; তেমনি ঊনবিংশ শতাব্দীতে বাংলার নারীর প্রতি অবিচার ও পণপ্রথার কদার্য রূপ তুলে ধরেছেন।
বড়দিদি
বড়দিদি শরৎচন্দ্রের একটি হৃদয়স্পর্শী উপন্যাস। প্রধান চরিত্র যুবতী হওয়ার আগেই অকালে বিধবা হয়ে যায়। জমিদারি প্রথা ও তৎকালীন ধনী সম্প্রদায়কে কৌশলের মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলেছেন লেখক।
পরিণীতা
পরিণীতা মূলত একটি নিরন্তর প্রেমকাহিনী। এই উপন্যাসটি রচিত হয়েছিল বিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে কলকাতার পটভূমিতে। প্রধান চরিত্র ললিতা ও শেখরের সম্পর্কের নানান টানাপড়েন এবং শেখরের অহংবাদী, উচ্চাকাঙ্ক্ষী চরিত্র অঙ্কিত হয়েছে এই উপন্যাসে।