আ লো চ না – সা হি ত্য
তানজিনা তাবাস্সুম নোভা
বাংলায় শিশু-কিশোর সাহিত্যের ধারাকে বর্তমানে কিছুটা অবহেলিত বলে মনে হয়। এই বয়সীদের জন্য সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত মানসম্পন্ন সাহিত্যকর্মের সংখ্যাও অপ্রতুল। কিন্তু সবসময় পরিস্থিতি এমন ছিল না। অতীতে প্রথিতযশা সাহিত্যিকেরা শিশু-কিশোরদের জন্য অনেক লেখালিখি করতেন। তাঁদের সকলেই হয়তো শিশু-কিশোর সাহিত্যের জন্য আলাদা করে পরিচিত ছিলেন না বা এখনও নন, কিন্তু ঐ বয়সীদের জন্য লেখার ক্ষেত্রেও তাঁদের লেখায় যত্নের কোনো অভাব ছিল না। আজকের লেখাটি তেমন কয়েকজন সাহিত্যিককে নিয়ে, যাঁরা নিজেদের লেখার মাধ্যমে শিশু-কিশোরদের নতুন জগতের সন্ধান দিয়েছেন বা এখনও দিয়ে যাচ্ছেন।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
বাংলা সাহিত্যের প্রায় সব ধারাই রবীন্দ্রনাথের জাদু-স্পর্শ পেয়েছে, শিশু-কিশোর সাহিত্যও তার ব্যতিক্রম নয়। অনেক কম বয়সেই জ্ঞানদানন্দিনীর সম্পাদনায় প্রকাশিত বালক পত্রিকার ভার অনেকটা রবীন্দ্রনাথের ওপর ছিল। এই পত্রিকায় তিনি লিখলেন মুকুট বড়গল্প, রাজর্ষি উপন্যাস। রাজপরিবারের কাহিনী, স্বার্থ বা লোভের জন্য হানাহানি — এ ধরনের বিষয়বস্তু নিয়ে এই লেখাগুলো রচিত হলেও তা এমনভাবে লেখা ছিল যা ছোটদের উপযোগী ছিল। ছোটদের জন্য লেখার ক্ষেত্রে তাঁর উদ্দেশ্য ছিল সচেতনভাবে পাঠকদের কল্পনাকে উসকে দেওয়া। এছাড়াও তিনি শিশু-কিশোরদের জন্য প্রচুর ছড়া-কবিতা লিখেছেন। ছোটবেলার পাঠ্যবইয়ে পড়া আমাদের ছোট নদী চলে বাঁকে বাঁকে কিংবা মেঘের কোলে রোদ হেসেছে, বাদল গেছে টুটি — এসব তার কয়েকটি উদাহরণ মাত্র। সহজ পাঠ, শিশু, শিশু ভোলানাথ, ছড়া ও ছবি সহ আরো অনেক গ্রন্থে তাঁর এ ধরনের ছড়া ও কবিতা সংকলিত আছে।
কাজী নজরুল ইসলাম
প্রভাতী, খুকী ও কাঠবিড়ালী, লিচুচোর, খাঁদু দাদু — এই ছড়া/কবিতাগুলো যাদের পড়া আছে নজরুলের শিশুসাহিত্যের মান নিয়ে তাদের কোনো সংশয় থাকার কথা নয়। রবীন্দ্রনাথের মতো নজরুলও জ্ঞানদানকে কখনও শিশুসাহিত্য রচনার উদ্দেশ্য বলে মনে করেন নি। বরং শিশুমনের সারল্য, তাদের যে ফ্যান্টাসির জগতে বসবাস, এসবই তাঁর লেখায় খুব সুন্দরভাবে উঠে এসেছে। ঝিঙেফুল, সঞ্চয়ন, চয়নিকা ইত্যাদি কাব্যগ্রন্থ এবং পুতুলের বিয়ে, জাগো সুন্দর চির কিশোর ইত্যাদি নাটিকা বাংলা সাহিত্যের অমূল্য সম্পদ। অথচ, প্রথম বাক্যে উল্লিখিত ছড়াগুলোর মতো খুব পরিচিত কিছু ছড়া-কবিতা বাদে বাকিগুলোর নাম পর্যন্ত বেশিরভাগ পাঠক জানেনই না।
উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী
যে কয়জন সাহিত্যিকের নাম উল্লেখ করা ছাড়া বাংলা শিশু-কিশোর সাহিত্যের ইতিহাস পূর্ণাঙ্গ হবে না, উপেন্দ্রকিশোর তাঁদের মধ্যে অন্যতম। আধুনিক ছাপাখানা প্রতিষ্ঠা থেকে শুরু করে শিশু-কিশোরদের জন্য বিখ্যাত সন্দেশ পত্রিকা শুরু করা — তাঁর অবদান সবদিকেই রয়েছে। ছড়া, কবিতা, গল্প, নাটক, গান, বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ, রূপকথা, উপকথা, পৌরাণিক কাহিনীসহ শিশু-কিশোর সাহিত্যের প্রায় সব শাখাতেই তাঁর বিচরণ ছিল। তাঁর রচিত বইগুলোর আর একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য ছিল সেগুলোতে তাঁর নিজের আঁকা চিত্রকর্মের সংযোজন। উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর লেখা উল্লেখযোগ্য বইগুলোর মধ্যে রয়েছে: ছেলেদের রামায়ণ, ছেলেদের মহাভারত, টুনটুনির বই, গুপী গাইন বাঘা বাইন, সেকালের কথা, আকাশের কথা ইত্যাদি।
সুকুমার রায়
পিতা উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর যোগ্য উত্তরসূরী ছিলেন সুকুমার রায়। তবে এটুকু বললে তাঁকে নিয়ে আসলে কিছুই বলা হয় না, কেননা বাংলা সাহিত্যে সুকুমার রায়ের তুলনা শুধু তিনিই। অনেক কম বয়স থেকেই তাঁর লেখালিখির শুরু হলেও উপেন্দ্রকিশোরের মৃত্যুর পর সন্দেশ পত্রিকার সম্পাদনার দায়িত্ব পালনকালীন তিনি বাংলা সাহিত্যকে তাঁর সেরা কাজগুলো উপহার দিয়েছেন। সুকুমার রায় সবচেয়ে জনপ্রিয় তাঁর ননসেন্স ছড়াগুলোর জন্য, এবং বাংলা ভাষায় প্রথম এ ধরনের ছড়া তিনিই লেখেন। এ ছড়াগুলোর বিশেষ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এই যে, ছড়াগুলো পড়ে শিশু-কিশোররা যেমন আনন্দ পাবে, তেমন প্রাপ্তবয়স্করাও এই ছড়াগুলো থেকে ভিন্ন অর্থ বের করে আনন্দ পেতে পারেন। এছাড়াও তাঁর লেখার মধ্যে ট্যাঁশগরু, কুমড়োপটাশ, হাতিমি, বকচ্ছপ — এমন কাল্পনিক অনেক প্রাণির বর্ণনার মাধ্যমেও তিনি পাঠকদের আনন্দিত করেছেন, খুদে পাঠকদের কল্পনাশক্তিকে জাগিয়ে তুলেছেন। ছড়া, গল্প, নাটক, জীবনীসহ আরো অনেক বিচিত্র বিষয়ে সুকুমার তাঁর পাঠকদের জন্য লিখে গেছেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য রচনার মধ্যে রয়েছে আবোল তাবোল, পাগলা দাশু, হ য ব র ল, হেঁশোরাম হুঁশিয়ারের ডায়রি, অবাক জলপান ইত্যাদি।
সত্যজিৎ রায়
ভিশনারি বা স্বপ্নদ্রষ্টা সবাই হন না, কেউ কেউ হন। সত্যজিৎ রায় সর্বার্থে একজন ভিশনারি ছিলেন। পিতামহ উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী ও পিতা সুকুমার রায়ের কাজ দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েও তাঁর সৃষ্টি স্বতন্ত্র মহিমায় উজ্জ্বল। তাঁর খ্যাতি মূলত একজন চলচ্চিত্র নির্মাতা হলেও সাহিত্যে, বিশেষত শিশুসাহিত্যে তাঁর অবদান কোনোভাবেই কম নয়। সন্দেশ পত্রিকাটিকে তিনি আবার নতুন করে চালু করেন। তাঁর সৃষ্ট গোয়েন্দা চরিত্র ফেলুদা, ফেলুদার সহযোগী তোপসে আর রহস্য-রোমাঞ্চ লেখক লালমোহন বাবু, বিজ্ঞানী প্রফেসর শঙ্কু, গল্পবলিয়ে তারিণীখুড়ো — সবাই-ই শিশু-কিশোর পাঠকদের মন জয় করে নিতে সক্ষম। এর বাইরেও তিনি প্রচুর ছোট গল্প লিখেছেন ও অনুবাদ করেছেন, যা গল্প ১০১ নামের গ্রন্থে সংকলিত হয়েছে। তোড়ায় বাঁধা ঘোড়ার ডিম তাঁর অনূদিত কবিতা ও স্বরচিত লিমেরিকের সংকলন। নিজের চলচ্চিত্র শুটিং এর অভিজ্ঞতা নিয়ে একেই বলে শুটিং, এবং ছোটবেলার স্মৃতি নিয়ে যখন ছোট ছিলাম বইগুলোও তাঁর রচনার মধ্যে উল্লেখযোগ্য। পিতামহ ও পিতার পথ ধরে তাঁর লেখা বইগুলোতেও তাঁর নিজের অলংকরণ থাকত।
লীলা মজুমদার
বিখ্যাত রায় পরিবারের আর একজন সদস্য, যিনি বাংলা শিশু সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছেন, তিনি লীলা মজুমদার। সুকুমার রায়, সুখলতা রাও, সুবিনয় রায়, পুণ্যলতা চক্রবর্তী-দের মতো সাহিত্যিকদের মাঝে যাঁর বেড়ে ওঠা, তাঁর পক্ষে সাহিত্যের দিকে ঝোঁকাই তো স্বাভাবিক। তাঁর বড়দা (সুকুমার রায়)-র উৎসাহে ১২ বছর বয়সে তিনি লক্ষ্ণীছেলে শিরোনামে একটি গল্প লেখেন, যা সন্দেশ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। তাঁর গল্পগুলোর মধ্যে অ্যাডভেঞ্চার, কল্পবিজ্ঞান ইত্যাদি নানা বিষয় রয়েছে। আবার, অনেক গল্পের শুরুটা ভূতুড়ে ধরনের কিছুর আভাস দিলেও শেষে এসে দেখা যায় তা নিতান্তই মামুলি কিছু। এসব ব্যাপার শিশু-কিশোর পাঠকদের ভয়কে জয় করতে শেখায়, যুক্তি দিয়ে চিন্তা করতে শেখায়। তাঁর রচিত উল্লেখযোগ্য বইয়ের মধ্যে রয়েছে: দিনে দুপুরে, হলদে পাখির পালক, পদি পিসির বর্মী বাক্স, মাকু ইত্যাদি।
শাহরিয়ার কবির
এটা অত্যন্ত দুঃখজনক যে, শাহরিয়ার কবিরের লেখা কিশোর উপন্যাসগুলোর কথা কেউ তেমন বলে না। অথচ বাংলাদেশে তাঁর মতো করে কিশোর উপন্যাস আর কেউ লেখেন নি। নুলিয়াছড়ির সোনার পাহাড় বা হানাবাড়ির রহস্য-র মতো অ্যাডভেঞ্চারে ভরপুর বইও তিনি লিখেছেন, কিন্তু এর চাইতে বেশি লিখেছেন এমন বই যেগুলোর একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ রাজনীতি আর ইতিহাস সচেতনতা। বাংলাদেশের প্রথম কিশোর উপন্যাস পূর্বের সূর্য তাঁর লেখা, যা এক কিশোরের দৃষ্টিতে মুক্তিযুদ্ধের বর্ণনা। এছাড়া, স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশের কমিউনিস্ট দলগুলোর কর্মকাণ্ড নিয়ে হারিয়ে যাওয়ার ঠিকানা, পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যা নিয়ে সীমান্তে সংঘাত, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা নিয়ে আলোর পাখিরা, কিংবা রুমানিয়ার রাজনীতি নিয়ে কার্পেথিয়ানের কালো গোলাপ — এই বইগুলোর বিষয় বৈচিত্র্য সাক্ষ্য দেয় যে, কিশোর ঔপন্যাসিক শাহরিয়ার কবিরের বইগুলো আরো বেশি পঠিত এবং আলোচিত হওয়া দরকার।
আবদুল্লাহ আল মুতী
বাংলাভাষী শিশু-কিশোরদের কাছে বিজ্ঞানকে জনপ্রিয় করে তোলার ক্ষেত্রে আবদুল্লাহ আল মুতী অনেক গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। প্রাঞ্জল ভাষায়, গল্পচ্ছলে লেখা তাঁর বইগুলো বিজ্ঞানের জটিল বিষয়গুলোকে সহজভাবে পাঠকদের সামনে তুলে ধরে। আবিষ্কারের নেশায়, রহস্যের শেষ নেই, এসো বিজ্ঞানের রাজ্যে, সাগরের রহস্যপুরী তাঁর প্রকাশিত বইগুলোর মধ্যে অন্যতম। মুকুল নামে পাক্ষিক কিশোর পত্রিকার সাথেও তিনি যুক্ত ছিলেন। এছাড়াও তিনি ছিলেন কেন্দ্রীয় কচি কাঁচার মেলা-র অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা।
হুমায়ূন আহমেদ
কোনো এক দুর্বোধ্য কারণে হুমায়ূন আহমেদের শিশু-কিশোরদের জন্য লেখা গল্প-উপন্যাসগুলো তেমন আলোচনায় আসে না। অথচ ঐ বয়সীদের জন্য তাঁর রচনাগুলো তাঁকে বাংলাদেশের অন্যতম সফল শিশু-কিশোর সাহিত্যিক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে। এই ধরনের সাহিত্যের গতানুগতিক ধারার বাইরে গিয়ে তিনি তাঁর লেখায় কল্পনাকে পুরোপুরি ডানা মেলতে দিয়েছেন, সম্ভব-অসম্ভবের মাঝের সব দেওয়াল সেখানে মুছে গেছে। তাই তো, তাঁর কোনো গল্পের মূল চরিত্র হয় একজন পিঁপড়ে (পিপলী বেগম), কোনো গল্পের মূল চরিত্র হয় একজন ভূত যে কিনা আবার বোকা (বোকাভূ), কোনো গল্পে ‘ঝেং এর বাচ্চা’ নামে এক অশরীরী নানা মজার কাণ্ড ঘটায় (একি কাণ্ড!), আবার কোনো গল্পে এক কথা বলা কাক এসে হাজির হয় (কাকারু)। এমন বিচিত্র সব গল্পের কারণে এই লেখাগুলো প্রাপ্তবয়স্কদের কাছেও সমান উপভোগ্য। এছাড়াও তাঁর উল্লেখযোগ্য শিশু-কিশোর রচনার মধ্যে আছে: বোতল ভূত, পরীর মেয়ে মেঘবতী, নীল হাতী, তোমাদের জন্য রূপকথা, সূর্যের দিন ইত্যাদি।
মুহম্মদ জাফর ইকবাল
মুহম্মদ জাফর ইকবালকে বাংলাদেশি জনপ্রিয়তম শিশু-কিশোর সাহিত্যিকদের একজন বললে মোটেও অত্যুক্তি হবে না। তাঁর লেখা কিশোর উপন্যাস আর সায়েন্স ফিকশন পড়ে এ দেশের কয়েকটি প্রজন্ম বেড়ে উঠেছে। তাঁর বেশিরভাগ কিশোর উপন্যাসে একটা অ্যাডভেঞ্চারের গল্প থাকে, দেশের প্রতি ভালোবাসার কথা থাকে। আমার বন্ধু রাশেদ-এর মতো মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক কিশোর উপন্যাস যেমন তিনি লিখেছেন, তেমন দুষ্টু ছেলের দল-এর মতো নিখাদ অ্যাডভেঞ্চারের গল্পও তিনি লিখেছেন, দীপু নম্বর টু-এর মতো ‘coming-of-age’ ঘরানার বইও লিখেছেন, আবার কাবিল কোহকাফী-র মতো ফ্যান্টাসির মিশেলে ভরা গল্পও লিখেছেন। তাঁর সায়েন্স ফিকশনগুলো আরো বৈচিত্র্যময়। মহাকাশ যাত্রার গল্প (ট্রাইটন একটি গ্রহের নাম, ফোবিয়ানের যাত্রী), মহাকাশের প্রাণি পৃথিবীতে নেমে আসার গল্প (টুকুনজিল, প্রজেক্ট নেবুলা), কিংবা খ্যাপাটে বিজ্ঞানীর অদ্ভুত কাণ্ডকারখানা (বিজ্ঞানী সফদর আলীর মহা মহা আবিষ্কার, বিজ্ঞানী অনিক লুম্বা) — এমন নানা বিষয় নিয়ে তিনি লিখেছেন।
উল্লিখিত সাহিত্যিকেরা ছাড়াও প্রচুর সাহিত্যিক আছেন যাঁরা বাংলা শিশু-কিশোর সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছেন। যাঁদের কথা এই লেখায় আসে নি, তাঁদের মধ্যে অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর, দক্ষিণারঞ্জন মিত্র মজুমদার, জসীম উদ্দীন, শিবরাম চক্রবর্তী, মোহাম্মদ নাসির আলী, সাজেদুল করিম, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, রোকনুজ্জামান খান, লুৎফর রহমান রিটন উল্লেখযোগ্য।
লেখক টিডিএ এডিটোরিয়াল টিমের একজন সদস্য।